সত্যি কথাই বলছি। আমাকে কিন্তু আপনারা কেও চিনতে পারবেন না। আপনাদের সাথে আমার তেমন করে আলাপ পরিচয় হয়নি তবে আমার নানা ভাইয়াকে আপনারা ভাল করেই জানেন, তার সাথে আপনাদের বেশ
সখ্যতা আছে আমি জানি। যখন তিনি ল্যাপটপ দিয়ে আপনাদের জন্য গল্প লেখেন আবার এখানে পোস্ট করেন তখন আমি কাছে এলেই তিনি তার যত রকমের বাধা দেয়ার কৌশল জানা আছে সবই করেন। আমাকেও যে ল্যাপটপে কাজ করতে দিতে হবে তা তিনি কিছুতেই বুঝতে চান না। তিনি অবশ্য তার একটা ল্যাপটপ আমাকে দিয়েছেন কিন্তু এটার মনিটরে কোন আলোতো জ্বলেই না, কী বোর্ড বা মাউস প্যাডের সাথে কুস্তী করেও কিছু হয় না, পরে বুঝলাম ওটা তার বাতিল নষ্ট ল্যাপটপ।
তবুও কিছু কথা আপনাদের না জানালে আমি অস্বস্তি বোধ করছি, কথাগুলি আমার পেটের ভিতর শুধু টগবগ করে ফুটছে কিছুতেই আটকে থাকতে চাইছে না। আমিওতো আপনাদের সাথে পরিচিত হতে চাই, শব্দনীড়ের জন্য কিছু লিখতে চাই। আমার নানা আমাকে শোনান “ থাকবোনাকো বদ্ধ ঘরে দেখব এবার জগতটাকে” কিন্তু যখনই আমি নানার সাথে ঘরের বাইরে যেতে চাই তখনই তিনি বিরক্ত হন। কোমরে ব্যথা, পায়ে ব্যথা এমনি নানা রকম অজুহাত দাড় করেন। তবুও কখনও বাইরে নিয়ে গেলে আমি যখন চারিদিকের নানা কিছু দেখে সব কিছু জানতে চাই তখনও তিনি বিরক্ত হন। এইতো সেদিন আমাকে কোলে নিয়ে বাড়ির কাছে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন তখন শুনলাম রাস্তার মাঝের ম্যান হোল থেকে শব্দ আসছে। আমি আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে জানতে চাইলাম এটা কিসের শব্দ? নানা ভাই আমাকে বুঝিয়ে দিলেন এটা ম্যান হোল, এখান দিয়ে প্রতিটি বাড়ির নোংড়া পানি সহ বৃষ্টির পানি নিষ্কাসিত হয়, একটু আগে যে বৃষ্টি হয়েছে সেই পানি যাচ্ছে বলে শব্দ হচ্ছে।
আবার ছাদে যেয়ে যখন টবে পানি দেয়ার বালতি হাতে পানির ট্যাংক এর কাছে যেতে চাইলাম তখন বাধা দিয়ে বললেন না না তোমাকে এ কাজ করতে হবে না। আচ্ছা ঠিক আছে করলাম না। তার পরে ছাদের একটা চেয়ার টেনে আম গাছটার নিচে নিতে চাইলাম তাতেও তার নিষেধাজ্ঞা, বলে কিনা “এই পণ্ডিত ওটা ধরবে না ব্যথা পাবে”। আচ্ছা বলতে পারেন এতসব বাধা বিপত্তি এড়িয়ে আমি কেমন করে সত্যিকারে পণ্ডিত হতে পারি?
সেদিন নানা ভাই ইনসুলিন নিচ্ছিলেন। আমি তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে তার কাছে গিয়ে মাত্রই ইনসুলিনের বাক্সটা ধরেছি আর ওমনি তিনি চ্যাচিয়ে আমার মাকে ডেকে বললেন ওকে ধর। কিন্তু আমিও নাছোড় বান্দা, না আমার হাতে ওই বাক্স দিতেই হবে, না তিনি তা দিলেন না। এর মধ্যে ইনসুলিন নিয়ে আমার হাতে তুলার টুকরা দিয়ে বললেন যাও এটা বিনে ফেলে দাও, যাক এতেই আমি খুশি কিন্তু তাকে ইনসুলিন দিতে না পারার একটু দু:খ মনের কোণে রয়েই গেল।
সেদিন নানা ভাই ইনসুলিন নিচ্ছিলেন। আমি তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে তার কাছে গিয়ে মাত্রই ইনসুলিনের বাক্সটা ধরেছি আর ওমনি তিনি চ্যাচিয়ে আমার মাকে ডেকে বললেন ওকে ধর। কিন্তু আমিও নাছোড় বান্দা, না আমার হাতে ওই বাক্স দিতেই হবে, না তিনি তা দিলেন না। এর মধ্যে ইনসুলিন নিয়ে আমার হাতে তুলার টুকরা দিয়ে বললেন যাও এটা বিনে ফেলে দাও, যাক এতেই আমি খুশি কিন্তু তাকে ইনসুলিন দিতে না পারার একটু দু:খ মনের কোণে রয়েই গেল।
আর একদিন সিঁড়ি দিয়ে উঠে ছাদে যেতে চাইছিলাম তখন আমাকে দেখেই ভাইয়া দৌড়ে এসে বাধা দিলেন, বলে কিনা আমি নাকি পরে গিয়ে ব্যথা পাব! এমনি যখন যাই করতে চাই সব কিছুতেই আমাকে interrupt করেন। সেদিন দেখলাম মা রান্না ঘরে চুলা জ্বেলে কি যেন রান্না করছিল, মা তখন সিংকে কি ধোয়ার কাজে ব্যস্ত। ভাবলাম আমার একটু গরম পানি দরকার তাই আমার পানির ফিডারটা নিয়ে মাত্রই চুলার উপরে ধরতে গেছি আর অমনি ভাইয়া এসে আমাকে চিলের মত ছো দিয়ে নিয়ে এলো। জ্বলন্ত চুলার উপরে আমার ফিডারটা ধরতেই পারলাম না, মা পিছনে ঘুরে দেখে অবাক হয়ে আমার দিয়ে তাকিয়ে রইল।
নানা ভাই অফিস থেকে ফিরলেই আমি তার জুতা মুজা খুলে রাখার জায়গা দেখিয়ে আবার ঘরে স্যান্ডেল কোথায় আছে তাও দেখিয়ে দেই তারপরে তার কোলে উঠে হাতের ইশারায় গেট দেখিয়ে বলি আমাকে নিয়ে এখন একটু বাইরে চল।
কয়েকদিন আগে নানা ভাই পাশের রেজা ভাইয়ের দোকান থেকে মসুর ডাল, সাবান, চিনি এরও কত কি আনতে গেল সাথে আমাকে কোলে নিয়ে গেল, সবকিছু মিলিয়ে প্যাকেটটা অনেক বড় হয়ে গেল তাই আমি ভাবলাম অন্তত মসুর ডালের প্যাকেটটা আমার হাতে নিই নানা ভাইয়ের কোলে বসে মসুর ডালের প্যাকেট হাতে করে এনে নানুর হাতে দিলাম, আর নানু যে কী খুশি হলো তা আর বলার নয়। আমার যে সংসারের অনেক কাজ করতে ইচ্ছা হয়, মনে হয় আমি সারাদিন ব্যস্ত থাকি। সারাদিন কি আর পড়াশুনা এবং খেলাধুলা করা যায়? যদিও নানা ভাইয়া আমাকে অনেক বই আর খেলনা কিনে দিয়েছেন। কিন্তু কিছু করতে গেলেই তিনি আমাকে ভীষণভাবে interrupt করেন তাহলে আমার জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বাড়বে কেমন করে? আমার বয়স এখন দেড় বছর, এখন থেকেই যদি এই ঘূর্ণায়মান পৃথিবীর সবকিছু এক এক করে শিখে না নেই তাহলে আমি সত্যিকারে শিক্ষিত হব কি করে? আমার নানা ভাই এ কথা কেন বুঝতে চায় না বুঝি না!
তাহলে এবার আপনাদের সাথে পরিচয়ের পালাটা সেরে ফেলি, আমি রিজভান রিহান, আমার নানা ভাইয়া জনাব খালিদ উমর। ছবিতে আমি ছাদের উপর টবে পানি দিতে চাইছিলাম কিন্তু ভাইয়া আমাকে দিতে দেয়নি! এমনি করেই তিনি আমাকে সব কাজে বাধা দেন।
আপনারা একটু আমার নানা ভাইয়াকে বলে দিবেন তিনি যেন আমার ইন্টারাপ্টার না হন।
No comments:
Post a Comment